পর্দা

হিমু

আজকাল পোশাক পরিধানের বহু নিয়ম-কানুন রয়েছে। অনেকে আবার পোশাক আশাকে একপ্রকার অধিকার কিংবা স্বাধীনতা বলে উল্লেখ করেন। এ নিয়ে বহু ব্যক্তির তর্ক বিতর্কও রয়েছে। কেউ যদি এর বিপরীত তর্কে শামিল হয় তবে তার গর্দান যেন সুলির নিচে পতিত হলো। তাই আমি আদম সন্তানদের বিবেক জাগ্রত করিয়া আমার কিছু অভিমত তুলে ধরিতে চাই।তবে কেউবা আমার এই অভিমত শুনিয়া আমাকে ঠাট্টা বিদ্রুপ করিয়া গালমন্দ করিতে পিছপা হবে না।

প্রাচীনকালে মনে হয় না নারীদের তেমন অধিকার কিংবা শ্রদ্ধা প্রদর্শন  করা হতো। তারা সবসময়ই ঘৃণিত সমাজ হিসেবে পরিগণিত হতো। কেউবা আমার এই মন্তব্য শুনিয়া কথাটিকে বিশ্বাস না করিয়া এবং তাদের নিজস্ব যুক্তি তর্ক করিলে আমি তাতে প্রাচীন ইতিহাস সম্বন্ধে কেনই বা জ্ঞান দান করিব না।

খ্রিস্টপূর্বে আবির্ভাব হয় বিজ্ঞানী অ্যারিস্টট্ল। তার হাত ধরেই আমরা এই জগৎ সম্পর্কে চিন্তাভাবনায় উৎসাহিত হই। তার মতো জ্ঞানী- গুণী মানুষ মনে হয় না দু -একটা  ধরণীতে জন্মেছে। তাকে আবার রাষ্ট্রবিজ্ঞানের জনক হিসেবেও স্বীকৃতি করা হয়। তার উল্লেখিত নাগরিকের সংজ্ঞাকে অবলম্বন করে গ্রিক নগর রাষ্ট্রে নারীদের নাগরিক হিসেবে গণ্য করা হতো না। তাই তারা কোনো প্রকার রাষ্ট্রীয় কাজে অংশগ্রহণ করার থেকে দূরেই থাকতো।

মধ্যে যুগের জাহিলি যুগের কথা সম্পর্কে অনেকেই অভিহিত রয়েছেন। তখনকার সময় কিছু নির্লজ্জ পুরুষের আবির্ভাব হয়। তারা নারীদের পণ্য  হিসেবে ব্যবহার ও কেনা বেচা করা শুরু করে। তখনকার যুগে পুরুষেরা নারীদের দেহ থেকে পোশাক বিলীন করত আর এখনকার যুগে নারীরা সচ্ছানন্দে অল্প অল্প  করে তাদের দেহ থেকে কাপড় সরাচ্ছে। পার্থক্যটা শুধু দুই প্রজন্মের।  তখন ইসলাম নারীর মর্যাদাকে পুরুষের তুলনায় স্বউচ্ছ করে দেয় এবং তাদের অধিকার সমৃদ্ধ করে। সেই ধর্মীয় শিক্ষাকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়ে বর্তমানে তারা প্রায়  এক প্রকার উলঙ্গ অবস্থায় চলাফেরা করে। নিজের পায়ে নিজে কুড়াল হাকিয়ে এখন তারা কোন অধিকার নিয়ে দাবি করছে তা আমার জানা নেই।

অভিমত এই, "যে বস্তুর মূল্য যত বেশি সে বস্তু সুরক্ষাও ততো বেশি"

আমি এখানে ধনসম্পদের কথা বলছিনে, আমি বলছি নারীর মূল্যের কথা। তাদের যে সৌন্দর্য তা একান্ত অধিক মূল্যবান। এক্ষেত্রে নারীদের মূল্যকে প্রাধান্য দিয়ে তাদের সুরক্ষাকে বিবেচনার সামিলে পর্দার ব্যবস্থা করা হয়। কিন্তু আজ আর ভালোর জমানা আছে কোথায়। কাপড় যত ছোট হবে ততই যেন মর্ডান যুগের অধিবাসী হবে। কিন্তু তারা যে তাদের সুরক্ষা হানি করছে তা কেই বা বলবে।

আমি শুধুমাত্র একান্ত নারীদেরই লাঞ্ছিত করছিনে।শুধুমাত্র নারীদের প্রতি আমি বীরূপ মনোভাব পোষণ করছি না, পুরুষদেরও পর্দা রয়েছে। নজরের পর্দা করাও একান্ত তাৎপর্যপূর্ণ। যা অনেক পুরুষ গ্লানি হিসেবেই ক্ষেপণ করে। নারীদের দিকে কুদৃষ্টিতে দেখা যেন সব যুগের পুরুষদের মধ্যে  বর্তমান রয়েছে। যা আমাদের জন্য লাঞ্ছনীয়। তবে বর্তমানে পুরুষদের পোশাকের ধরন তেমন সুবিধার ঠেকচেনা। তারাও নারীদের আকর্ষণের জন্য তারাও নানারকম পোশাক-আশাক পরিধানের সামিল হচ্ছে।

আমি কাউকে ঘৃণিত চোখে দেখতে চাচ্ছিনে,আমি চাচ্ছি উভয়ের সুরক্ষা উভয়ই করার মাধ্যমে সমাজ থেকে বৈরী আচরণ এবং ধর্ষনের মতো নগণ্য কার্যকলাপ হ্রাস পাক। আমার কথাগুলো যদি কারোর চোখে ঘৃণিত হয় তবে একটা কটু হাসি দিয়ে প্রস্থান করুন।